Breaking News

ই-সিম কিভাবে ক্রয় করতে হবে ও ই-সিম ব্যবহার করার নিয়ম

ই-সিম (E-SIM) এর প্রচলন বাংলাদেশে শুরু হবার পর এই ই-সিম কিভাবে ক্রয় করতে হবে ও ই-সিম ব্যবহার করার নিয়ম ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানার বেশ কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে আমাদের মাঝে। ই-সিম ক্রয় করার জন্য আমাদের কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে বা কি কি ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন হবে ও ই-সিম কিভাবে এক্টিভ করতে হবে সবকিছু আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবেন।

তবে, বর্তমান সময়ে যেহেতু শুধুমাত্র গ্রামীণফোন কোম্পানি ই-সিম পরিষেবা চালু করেছে কাজেই অন্যান্য অপারেটর গ্রাহকগণ বর্তমানে ই-সিম ব্যবহার করতে পারবে না। যদি আপনি ই-সিম ব্যবহার করতে চান তাহলে অবশ্যই গ্রামীণফোন গ্রাহক হতে হবে। পরবর্তী সময় অন্যান্য কোম্পানি এই পরিষেবা চালু করলে সেটি ব্যবহার করা যাবে।

অপরদিকে ই-সিম ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই জেনে নিবেন আপনার স্মার্টফোন / মোবাইলটি ই-সিম সাপোর্টেড কি না? কেননা বর্তমানে খুবই অল্প মোবাইল রয়েছে যেগুলোতে ই-সিম প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে। ’’ই-সিম ব্যবহার করার নিয়ম’’ আর্টিকেলে স্বাগতম জানিয়ে মূল বিষয়ে প্রবেশ করছি।

ই-সিম কিভাবে ক্রয় করতে হবে?

ই-সিম ক্রয় করার জন্য প্রথমে আপনাকে ই-সিম পরিষেবা দিয়ে থাকে এরকম একটি কাস্টমার সেন্টারে যেতে হবে। অবশ্যই সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশন করার জন্য সাথে এনআইডি কার্ড বা পাসপোর্ট নিয়ে যাবেন। তারপর নিম্নোক্ত উপায় অবলম্বন করুনঃ-

  • নিজ পছন্দ অনুযায়ী একটি প্ল্যান বেছে নিন।
  • মোবাইল নম্বর সিলেক্ট করুন।
  • বায়োমেট্রিক এর মাধ্যমে ভেরিফিকেশন পদ্ধতিটি সম্পন্ন করুন।
  • মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ চালু করুন।
  • সিম কিটে দেওয়া QR কোডটি স্ক্যান করুন।
  • আপনার মোবাইল অনুযায়ী ধাপে ধাপে পরবর্তী প্রসেস সমূহ সম্পন্ন করুন…।

আপনি ইচ্ছে করলে অনলাইনে নিদিষ্ট কোম্পানির শপের মাধ্যমেও এই সিমের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে, যেহেতু আমাদের জন্য এটি সম্পূর্ণ নতুন এক অভিজ্ঞতা দিবে কাজেই সরাসরি কাস্টমার সেন্টারে উপস্থিত হয়ে কাজটি করা সহজ ও ভাল হবে।

আরও পড়ুন- ই-সিম কি? ই-সিম এর সুবিধা অসুবিধা সহ বিস্তারিত

সাধারণ সিম থেকে ই-সিমে আপগ্রেড করার নিয়মঃ-

বর্তমানে আমরা যেই প্লাস্টিক সিম কার্ড ব্যবহার করছি বা ব্যবহার করে আসছি সেটিকে চাইলে ই-সিমে পরিবর্তন বা মাইগ্রেড করা যাবে। মাইগ্রেড করতে ই-সিম সাপোর্টেড মোবাইল ফোনটি নিয়ে নিকটবর্তী এক্সপেরিয়েন্স সেন্টারে গিয়ে ই-সিম ক্রয় করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করুন অথবা ই-সিম সাপোর্টেড কোম্পানির অনলাইন শপে গিয়ে নিচের উপায় অবলম্বন করে পুরাতন সিমকে ই-সিমে কনভার্ট করে নিনঃ-

  • ই-সিম মাইগ্রেশন এর জন্য রিকুয়েস্ট করুন।
  • বায়োমেট্রিক এর মাধ্যমে ভেরিফিকেশন পদ্ধতিটি সম্পন্ন করুন।
  • মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ চালু করুন।
  • সিম কিটে দেওয়া QR কোডটি স্ক্যান করুন।
  • আপনার মোবাইল অনুযায়ী ধাপে ধাপে পরবর্তী প্রসেস সমূহ সম্পন্ন করুন…।

ই-সিম থেকে সাধারণ সিমে মাইগ্রেট করার নিয়মঃ-

সাধারণ সিম-কে যেমনিভাবে ই-সিমে পরিবর্তন করার সুযোগ রয়েছে, তেমনিভাবে ই-সিম কেও সাধারণ সিমে পরিবর্তন করা যাবে। ই-সিম থেকে সাধারণ সিমে মাইগ্রেট হতে নির্দিষ্ট কাস্টমার সেন্টারে উপস্থিত হয়ে নিচের উপায় অবলম্বন করুনঃ-

  • ই-সিম মাইগ্রেশন এর জন্য রিকুয়েস্ট করুন।
  • বায়োমেট্রিক এর মাধ্যমে ভেরিফিকেশন পদ্ধতিটি সম্পন্ন করুন। 
  • মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ চালু করুন।
  • মোবাইল থেকে ই-সিম প্রোফাইলটি ডি-এক্টিভেট করুন এবং ডিলেট করুন।
  • আপনার মোবাইল অনুযায়ী ধাপে ধাপে পরবর্তী প্রসেস সমূহ সম্পন্ন করুন…।

ই-সিম সচল রেখে মোবাইল পরিবর্তন করতে যা করণীয়ঃ-

বর্তমানে আমরা যেমনিভাবে বিভিন্ন প্রয়োজনে মেবাইল পরিবর্তন করার সাথে সাথে সিম কার্ড খুলে পরিবর্তন করতে পারি। ই-সিমের জগতেও এই কাজটি করা যাবে। তবে, যেহেতু এই ই-সিম খোলার সুযোগ নেই তাই কাজটি করা মোটেও পূর্বের মতো সহজ হবে না।

ই-সিম সচল রেখে মোবাইল পরিবর্তন করতে বা এক মোবাইল থেকে অন্য মোবাইলে ই-সিম ট্রান্সফার করতে নিচের উপায় অবলম্বন করুনঃ-

  • নতুন এবং পুরাতন দুটি মোবাইলেই ইন্টারনেট সংযোগ চালু করুন।
  • পুরাতন মোবাইল থেকে ই-সিম প্রোফাইলটি ডি-এক্টিভেট এবং ডিলেট করুন।
  • নতুন মোবাইলে ই-সিমের QR কোডটি স্ক্যান করুন।
  • আপনার নতুন মোবাইল অনুযায়ী ধাপে ধাপে পরবর্তী প্রসেস সমূহ সম্পন্ন করুন…।

আরও পড়ুন- সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশন চেক, মালিকানা পরিবর্তন ও রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম

ই-সিমের মূল্য কত?

বলাবাহুল্য যে, উপরোক্ত প্রতিটি কাজেই আমাদের কাছ থেকে কিছু টাকা ফি হিসেবে নেওয়া হবে। যেমনঃ-

  • নতুন ই-সিমের মূল্য প্রায় ২০০ টাকা।
  • সিম রিপ্লেসম্যান্ট বা পরিবর্তন করার মূল্য প্রায় ৯৯ টাকা।

ই-সিম ব্যবহার করার নিয়মঃ-

ই-সিম ব্যবহার করার প্রথম শর্ত হলো আপনার স্মার্টফোন বা ডিভাইসটি ই-সিম সাপোর্টেড হতে হবে। সেই সাথে ই-সিম পরিষেবা দিয়ে থাকে এরকম একটি অপারেটর কোম্পানির গ্রাহক হতে হবে এবং একটি সচল ই-সিম থাকতে হবে। তাহলেই আপনি আপনার ডিভাইসে ই-সিম ব্যবহার করতে পারবেন।

যেহেতু আমরা অলরেডি জানি যে, ই-সিম একটি ভার্চুয়াল সিম; এটিকে ফিজিক্যালি ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। কাজেই ই-সিম এক্টিভ করার জন্য সম্পূর্ণ কাজটি হবে একটি বিশেষ সফটওয়্যার / এপ্লিকেশন এর মাধ্যমে।

সর্বপ্রথম ই-সিম পরিষেবা দিয়ে থাকে এরকম একটি অপারেটর কোম্পানির কাস্টমার সেন্টার বা ই-সিম সেন্টারে উপস্থিত হোন। তারপর উপরোক্ত নিয়ম অনুসারে একটি ই-সিম ক্রয় করুন ও রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন।

রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে তারা আপানকে একটি QR কোড প্রদান করবে যা স্ক্যানিং করে আপনার ই-সিম এক্টিভ করতে পারবেন। উল্লেখ্য QR কোডটি কারও সাথে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।

আপনার ডিভাইস অনুযায়ী QR কোডটি স্ক্যানিং করার পর ধাপে ধাপে পরবর্তী প্রসেস সমূহ সম্পন্ন করতে হবে। ডিভাইসের ভিন্নতা অনুযায়ী ই-সিম এক্টিভ করার পদ্ধতিটি কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে তা ডিভাইস ভিত্তিক উল্লেখ করা হলোঃ-

আরও পড়ুন- ফেসবুক পেজ থেকে টাকা আয় করার উপায়

স্যামসাং / এন্ড্রয়েড মোবাইলে ই-সিম এক্টিভ করার নিয়মঃ-

যদি আপনি এন্ড্রয়েড ব্যবহারকারী হিসেবে Samsung মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন এবং সেটিতে ই-সিম এক্টিভ করতে চান তাহলে ই-সিমের QR কোডটি স্ক্যানিং করার পর পরবর্তী ধাপ হিসেবে নিচের পদ্ধতিটি অনুসরণ করুনঃ-

  • প্রথমে মোবাইলের সেটিংস অপশন থেকে > কানেকশনস > সিম কার্ড ম্যানেজার অপশনে প্রবেশ করুন।
  • এবার + Add Mobile Plan অপশনে ক্লিক করুন।
  • ডিভাইসটির সাথে ইন্টারনেট সংযোগ চালু না থাকলে সেটি চালু করে নিন এবং ই-সিম কিটে দেওয়া QR কোডটি স্ক্যানিং করুন।
  • স্ক্যানিং করার পর ধাপে ধাপে প্রসেসটি কমপ্লিট করুন।
  • সর্বশেষ আপনার মোবাইলে ডাটা প্ল্যান ডাউনলোড হবার পর ই-সিম এক্টিভ হয়ে যাবে।

আইফোনে ই-সিম এক্টিভ করার নিয়মঃ-

যদি আপনি আইফোন (iPhone) ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে ই-সিম এক্টিভ করতে নিচের পদ্ধতিটি অনুসরণ করুনঃ-

  • প্রথমে মোবাইলটিতে ইন্টারনেট সংযোগ চালু করে নিন।
  • তারপর মোবাইলের সেটিংস অপশনে প্রবেশ করুন এবং Mobile Data অপশনে ক্লিক করুন।
  • এবার দেখতে পাবেন Add Data Plan একটি অপশন পাবেন সেটিতে ক্লিক করুন।
  • তারপর আপনার ই-সিম কিটে দেওয়া QR কোডটি স্ক্যান করুন।
  • স্ক্যানিং করার পর ধাপে ধাপে প্রসেসটি কমপ্লিট করুন।
  • সর্বশেষ আপনার মোবাইলে ডাটা প্ল্যান ডাউনলোড হবার পর ই-সিম এক্টিভ হয়ে যাবে।

আইফোন ব্যতীত যদি আপনার কোনো স্মার্ট ওয়াচ থাকে যেটি ই-সিম সাপোর্টেড তাহলে সেটিতেও ই-সিম এক্টিভ করতে পারবেন খুবই সহজে।

ই-সিম ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ-

ই-সিম ব্যবহার করার নিয়ম জানার পর আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের জানা খুবই জরুরি। কারণ বাংলাদেশে ই-সিম একটি নতুন উদ্যেগ। তাই নিচের বিষয়াবলি সর্বদা খেয়াল রেখে ই-সিম ব্যবহার করতে হবে।

  • আপনাকে দেওয়া QR কোডটি ইউনিক এবং এটি বছরে দুই বারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। দুই বার অতিক্রম হলে পরবর্তীতে ব্যবহার করার জন্য এটিকে রিপ্লেসম্যান্ট করে নিতে হবে।
  • ই-সিম সেটিংস থেকে ’Delete’ অপশনটিতে অপ্রয়োজনে ক্লিক করা যাবে না। প্রয়োজনে অন্য নেটওয়ার্ক বা সিমে সুইচ করবেন।
  • যদি কখনও ই-সিম সেটিংস থেকে প্রোফাইলটি ডিলেট করে ফেলেন তাহলে পুনরায় QR কোডটি স্ক্যানিং করুন ও ধাপে ধাপে পরবর্তী প্রসেসটি কমপ্লিট করে পুনরায় ই-সিম এক্টিভ করুন।

আরও পড়ুন- সিম কার্ড কি? সিম কার্ড কিভাবে কাজ করে?

শেষ কথাঃ- প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত নিয়মে আপনার ই-সিমটি এক্টিভ করতে পারলেই এটি সচল হয়ে যাবে এবং আমাদের ব্যবহৃত অন্যান্য সিমের মতো ব্যবহার করা যাবে। অনেকের নিকট ই-সিম ব্যবহার করার নিয়ম সম্পর্কে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু ই-সিম ব্যবহার করার নিয়ম আমাদের পূর্বে ব্যবহৃত সিম কার্ডের মতোই।

নতুন প্রযুক্তি হিসেবে ই-সিম কিভাবে ক্রয় করতে হবে ও ই-সিম ব্যবহার করার নিয়ম ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে লিখার চেষ্টা করেছি। আশা করছি ই-সিম ব্যবহার করার নিয়ম সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পেরেছেন। এ সম্পর্কে যদি আরও কেনো তথ্য জানার প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদেরকে জানানোর অনুরোধ রইলো।

’’ই-সিম ব্যবহার করার নিয়ম’’ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। সবসময় সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে ভালো থাকবেন। আমাদের আরও অন্যান্য পোষ্টগুলো ভাল লাগলে অবশ্যই পড়তে পারেন। পরবতীর্তে আমাদের ওয়েবসাইটে আসার অনুরোধ করছি। আজ এই পর্যন্তই

———– ধন্যবাদ! ———–

About Bondhu24

Check Also

গুগল এডসেন্স ভেরিফাই করার সঠিক নিয়ম

গুগল এডসেন্স ভেরিফাই করার সঠিক নিয়ম | Google Adsence Verify System

গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করা যায় এটি হয়তো আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু টাকা আয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *