Breaking News

সবসময় খুশি থাকার উপায় ১০টি কার্যকরি টিপস

মানুষ সর্বদা খুশি থাকার উপায় খুঁজে বেড়ায়। পৃথিবীতে কেউ এমন নেই যে খুশি থাকতে চায় না। সবাই চায় নিজেকে খুশি দেখতে। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতির নানান জটিলতার মাঝে পড়ে মানুষ অনেক সময় হাসতে ভুলে যায়। মানুষ সুখের জন্য তাদের কাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলি পেতে চায়। সারাদিন ছুটতে থাকে সেগুলো পাবার জন্য। নিজেকে খুশি বা ভাল রাখার জন্য দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে জীবন-যাপন করে। দিন রাত খুশি থাকার উপায় খুঁজে নিজেকে ব্যস্ত রাখে।

কিন্তু দিন শেষে তারা তাদের অন্তরে গ্লানি, শূন্যতা আর হতাশা খুঁজে পায়। কারন তারা খুশি আর সুখ পাবার জন্য ভুল জায়গায় সন্ধান করছে। বাইরের বস্তু সর্বদা ক্ষণস্থায়ী। আজ আছে কাল নেই। সেই বস্তুগুলির সাথে যদি আমরা আমাদের খুশি বা সুখী থাকাকে সংযুক্ত করি তাহলে সেই খুশিও বেশিদিন থাকবে না। তাহলে কী এমন জিনিস আছে যা আমাদের সর্বদা খুশি অনুভব করাতে সাহায্য করতে পারে? এমন কী অনুশীলন করা যেতে পারে আজ সেটাই জানব–

সবসময় খুশি থাকার উপায়ঃ-

১. নিজেকে ভালবাসতে শিখুনঃ-

জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো নিজেকে ভালবাসতে শেখা। বলা হয়ে থাকে, ”যদি নিজেকে ভালোবাসতে না শেখো, তাহলে অন্যকেও ভালোবাসতে পারবে না।’’ সুখী বা খুশি থাকতে আমরা প্রায়শই নিজেদেরকে ভালোবাসতে বা সম্মান করতে ভুলে যাই। নিজেকে কখনও কোনো কিছুতে অযোগ্য মনে করা যাবে না। যারা আপনাকে ভালবাসতে পারে না, মর্যাদা দিতে পারে না তাদের থেকে দূরে থাকুন। সেই সঙ্গে নিজের ভুল ও দূর্বলতাগুলি আলিঙ্গন করতে শিখুন।

প্রত্যেকেরই ভুল থাকে। এই পৃথিবীতে কেউই পারফেক্ট নয়। নিজেকে ছোট বা অপমান করবেন না। ভুল থেকে শিখুন, মনে করুন, এই পৃথিবীটা একটা বড় ইউনিভার্সিটি আর আপনার জীবন একটা ক্লাসরুম। যেখান থেকে আপনি রোজ নতুন নতুন কিছু শিখতে পাচ্ছেন। ভুল করেছেন বলে চিন্তা করবেন না। নিজেকে ক্ষমা করে দিন বা বাকিদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন। নতুন করে আবার শিখুন, নিজেকে ভালোবাসুন। শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে, আধ্যাত্মিকভাবে সর্বদা নিজের যত্ন নিন কারন আজকের তুমি-ই পারো কালকের তোমাকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে।

২. নিজের সঙ্গে সময় কাটানঃ-

সারাদিন ব্যস্ত? নিজের সাথে সময় ব্যয় করবার সময় নেই? এক্ষুণি খুঁজে বের করুন কিছুটা সময়। দিনের কিছুটা সময় আমাদের নিজেদের জন্য একান্তভাবে ব্যায় করা উচিত। দিনের খানিকটা সময় চারপাশের ক্রমাগত নেতিবাচকতা থেকে নিজেকে বের করে আনার জন্য নিজের সাথে ভাল বোঝাপড়া থাকাটা খুব দরকার।

আমাদের মনই আমাদের চালিকাশক্তি। একটা পূর্ণ দিন বা একটা পূর্ণ সপ্তাহ হতে হবে না। শুধু কয়েকটা উষ্ণ মিনিট কাটান, সুন্দর কোনো প্রাকৃতিক জায়গায় গিয়ে কিছুক্ষণের জন্য সবকিছু ভুলে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যান। দেখবেন নিজের ভেতর একটা সুন্দর অনুভূতির ঝর্ণাধারা বাহিত হবে, একটা স্নিগ্ধ হাসি আপনার ঠোঁট ছোঁবে।

আরও পড়ুন- ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার সেরা উপায়

৩. শুধু না ভেবে করে ফেলুনঃ-

আমরা নিজেদের মনের ভেতর অনেক বিতর্কের সৃষ্টি করে মূল্যবান সময়গুলি নষ্ট করি শুধু এটা ভেবে যেটা আমি সবসময় করতে চেয়েছিলাম সেটা করব কী করব না? খুব বেশি না ভেবে করে ফেলাই উত্তম। যার যেটা ভালো লাগে, যেটা এতদিন স্বপ্নে পুষে রেখেছেন তা আজই করে ফেলুন।

জীবন খুবই ছোট। এজীবনে কখন কী হবে তা কেউ বলতে পারে না। তাই আপনার নিজেকে ভিতর থেকে খুশি রাখতে পারে এরকম কাজগুলো না ভেবে আজই করে ফেলুন। দেখবেন নিজেকে ভিতর থেকে একজন সুখি মানুষ হিসেবে অসুভব করতে পারছেন।

৪. আজকে বাঁচুনঃ-

এই দ্রুত বহমান জীবনযাত্রায় আমরা ভুলে যাই বর্তমান মুহূর্তে সুন্দর করে বাঁচতে। আমাদের মন সর্বদা ভয়ভীতি…. চিন্তা, পরিকল্পনা সমাধান ও উদ্বেগ নিয়ে থাকে। যার ফলাফল হলো মানসিক চাপ। অনেক বেশী চিন্তিত হওয়ার দরুণ আমরা সারাদিনের ছোট ছোট ক্রিয়াকলাপ গুলি থেকে আনন্দ নিতে ভুলে যাই।

কোনো কিছু নিয়ে ভাবা, এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা খারাপ ধারণা নয়, কিন্তু সর্বদা এটা নিয়ে ভাবা, অহেতুক চিন্তা করা আমাদের সুখকে, সুস্থ থাকাকে, আনন্দে বাঁচাকে হত্যা করতে পারে। একবার এই পরিকল্পনা, চিন্তার বেড়াজাল থেকে বাইরে আসুন, চারপাশে থাকা জিনিসগুলির স্বাদ গ্রহণ করুন। এতদিন যে জিনিসগুলোকে অবজ্ঞা করে এসেছেন বা তাকিয়েও তাকাননি, সেইসব বিষয়গুলির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করুন। দেখবেন সামান্য জিনিসগুলি আপনাকে অপার্থিব আনন্দ দান করবে।

৫. অন্যকে সাহায্য করুনঃ-

নিজের হৃদয় দিয়ে যখন আপনি অন্য কাউকে সাহায্য করবেন তখন অদ্ভুত এক ভাললাগা ও প্রশান্তি আপনাকে ছুঁয়ে যাবে। আমরা আসলে অন্যদের সাহায্য করার মাধ্যমে নিজেকেই সাহায্য করি, নিজের ভিতরে সুপ্ত থাকা সুন্দর অনুভূতিগুলিকে বের করে আনি। হতে পারে একজন বয়স্ক লোক রাস্তা পার হতে পারছে না আপনি তার হাতটা ধরে রাস্তা পার করে দিলেন।

অথবা আপনার বাড়িতে যে লোকটা সারাদিন কাজ করে তার জন্য ছোট্ট উপহার কিনে দিলেন, অথবা আপনার ক্লাসের এক সহপাঠীর কাছে হয়ত বই কেনার অত টাকা নেই, আপনি নিজের বইটি দিয়ে তাকে সাহায্য করলেন কিংবা টিউশনের টাকা জোগাড় করতে না পেরে পড়াশুনা ছেড়ে দিতে যাচ্ছে আপনার প্রতিবেশী ছোট্ট ভাইটি তার পাশে দাঁড়ালেন। দরকার শুধু একটু সাহায্যের হাত। একটু আধটু সাহায্য, দুটো ভালোমন্দ কথা, অন্যের মুখে হাসি ফোটালে আপনার মুখেও হাসি থাকবে সর্বক্ষণ।

আরও পড়ুন- প্রয়োজনীয় কিছু অ্যাপস

৬. অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হোনঃ-

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হলে তা আমাদের স্বাভাবিক হার্টবিট এবং দেহের কার্যকর প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বজায় রাখতে ভীষনভাবে সাহায্য করে। প্রিয় খাবার খেলে কিংবা কোথাও বেড়াতে গেলে আমরা আমাদের ভেতরে যেমন আনন্দের স্বাদ পাই ঠিক তেমনই আনন্দের রসদ খুঁজে পাওয়া যায় অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার মাধ্যমে।

যাদের পাশে কেউ নেই, যারা অসহায়, যারা ঘর ছাড়া, যারা মৃত্যুমুখে শয্যাশায়ী কিংবা সব হারিয়ে যে জীবনের প্রতি বিমুখ তাদের সাথে কথা বলুন। যারা আপনাকে কিছু বলতে চায় তাদের কথা শুনুন। তাদের সমস্যার সমাধান যদি নাও করতে পারেন তবুও তাদের মানসিক শান্তি জোগান। এতে করে আপনিও মানসিক শান্তির ছোঁয়া পাবেন।

৭. নিজের কাছে যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুনঃ-

অন্যের কি কি আছে তা দেখে দুঃখ না পেয়ে আপনার কাছে কি কি আছে তা দেখে খুশি হোন। আপনি যখন অন্যের কাছে থাকা জিনিসগুলো গুনবেন তখন নিজের কাছে যা আছে সেটা কখনো চোখে পড়বে না। রাস্তার পাশে অনাহারে পড়ে থাকা শিশু বৃদ্ধকে দেখুন, যাদের মা বাবা নেই যে ছোট থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দুমুঠো খাবার জোগাড় করে পেট চালায় তাদের দেখুন।

যাদের হাত পা নেই চলতে পারে না তাদের দেখুন। যারা রোজ আপনার বাড়ির দিকে তাকায় আর ভাবে ইশ্ আমারও যদি থাকার মতো এরকম একটি বাড়ি থাকত তাদের দেখুন। বুঝবেন কি কি আপনার কাছে আছে আর কেন এগুলি আপনার খুশির কারণ হতে পারে।

আরও পড়ুন- অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে আমাদের কিছু ভুল ধারনা

৮ Social Media থেকে কিছুটা দূরে থাকুনঃ-

জীবনের অপ্রয়োজনীয় চাপ কমানোর জন্য Social Media-র ক্ষুদ্রীকরণ করুন। সারাদিন ফেসবুক, ট্যুইটার, ইন্সটাগ্রাম, ই-মেইল চেক করতে যতটা সময় ব্যয় হয় ওই সময়টা যদি নিজের ভাল থাকার প্রতি লাগানো যায় তাহলে জীবন আরও সুস্থ ও সুন্দর হয়ে উঠতে পারে। অন্যের স্ট্যাটাস, অন্যের বেড়াতে যাওয়ার ছবি, পোষ্ট আমাদের মধ্যে অনেকের মনে নেতিবাচক ভাবনার জন্ম দেয়, কোনো গুজব অহেতুক হিংসার সৃষ্টি করে।

প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করেছে ঠিকই কিন্তু এর লাগাম ছাড়া ব্যাবহার কেড়ে নিয়েছে সামাজিক মূল্যবোধ সৌন্দর্য ও সৌহার্দ্য। তাই যতটা ব্যবহার না করলেই নয় ততটা ব্যবহার করুন। মনে রাখুন, অতিরিক্ত কোনো কিছুতে কখনও ভাল কিছু হতে পারে না। তাই অপ্রয়োজনীয় কাজগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।

৯. নেতিবাচন মানুষ থেকে দূরে থাকুনঃ-

আপনি সবাইকে বাঁচাতে পারবে না, আপনি সবাইকে একসাথে খুশি রাখতে পারবে না, আপনি শুধু আপনার সেরাটা দিতে পারবেন। যদি আপনার জীবনে এমন কেউ থাকে যে ধারাবাহিকভাবে কোনো কারন ছাড়াই আপনার উপর অহেতুক চাপ সৃষ্টি করছে, তবে সম্ভবত তাকে এড়িয়ে চলার সময় এখন এসেছে।

আরও পড়ুন- ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করার সেরা কয়েকটি টিপস

যারা আপনার চলার পথে আপনাকে বাঁধা দেয়, আপনার বিশ্বাসকে অমর্যাদা করে, আপনাকে ছোট করে অন্যের সামনে, তাদের থেকে একটা দূরত্ব বজায় রাখুন। তাদের ক্ষতি করবেন না, বরং তাদের ভাল ও কল্যাণ কামনা করেই তাদের কাছ থেকে দূর থাকুন।

১০. ধ্যান ও শরীরচর্চা অনুশীলনঃ-

আমাদের শরীর ও মন একে অপরের পরিপূরক। তাই মনকে ভাল রাখতে হলে অবশ্যই শরীরকে সুস্থ রাখতে হবে। আমাদের নিয়মিত শরীরচর্চা, ধ্যান ও সুষম খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা প্রয়োজন। নিয়মিত শরীরচর্চায় আমাদের দেহ থেকে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় যা আমাদের হাসিখুশি রাখতে সাহায্য করে।

আর তার সাথে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার প্রতিও নজর দিন। অগভীর ও দ্রুত শ্বাস না নিয়ে ধীরে এবং গভীর শ্বাস নিন যাতে বেশি অক্সিজেন ফুসফুসে প্রবেশ করে। তাহলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে। এতে আপনি সুস্থ ও ভাল কিছু অনুভব করবেন। জানেন তো একটা সুস্থ শরীরেই সুস্থ মন বাস করে। আর সুস্থ মনই হলো সুখ -শান্তি -ভালবাসার ছোট্ট একটা গৃহ। Happiness is not something readymade. It comes from your actions.

বন্ধুরা, আশা করছি উপরোক্ত টিপসগুলোর মধ্য থেকে খুশি থাকার উপায় খুঁজে পেয়েছেন। পোস্টটির মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। সবসময় সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে ভালো থাকবেন। আমাদের আরও অন্যান্য পোষ্টগুলো ভাল লাগলে অবশ্যই পড়তে পারেন। পরবতীর্তে আমাদের ওয়েবসাইটে আসার অনুরোধ করছি। আজ এই পর্যন্তই

———– ধন্যবাদ! ———–

About Bondhu24

Check Also

১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ

১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ ; যা নিত্যদিন ব্যবহারযোগ্য

আজকের আর্টিকেলে ১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ নিয়ে হাজির হয়েছি যা দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকেই ব্যবহার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *