Breaking News

ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার সেরা উপায় । How to Earn Money in Student Life?

ছাত্র জীবনে টাকা আয় কিভাবে? এই প্রশ্নটির সাথে আমরা সকলেই কম বেশি জড়িত ছিলাম বা আছি। আজকের পোস্টে আমরা ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার অভিনব কিছু কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। যদি আপনি ছাত্র জীবনে টাকা আয় করতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে যেকোনো একটি বা একাধিক পদ্ধতি অবলম্বন করে ছাত্র জীবনে টাকা আয় করতে পারেন।

ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার উপায়ঃ-

১. হোম টিউটোরিংঃ-

ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার প্রথম ও সহজ পদ্ধতি হলো টিউশনি করানো। এটি যে আপনি কেবল টাকার জন্য করবেন তা নয়, এটির মাধ্যমে আপনি আপনার নিজেকে আরও বেশি দক্ষ করে তুলতে পারবেন। আরও অনেক অজানা বিষয় জানতে ও শিখতে পারবেন। আপনি অন্যদের শিক্ষা দান করবেন এটি থেকে আর উত্তম কি হতে পারে? শুধু তা নয় এটির মাধ্যমে মানষিক প্রশান্তিও পাবেন।

তবে, আমাদের সমাজে অনেকেই এটিকে লজ্জাকর বা ছোট কাজ মনে করে এই ভেবে যে, আমার কি কোনো কিছুর অভাব আছে? এটি শুধুমাত্র আমাদের ছোট মন-মানসিকতার পরিচয় ছাড়া আর কিছুই প্রমাণ করে না। আপনি যদি কোনো বিষেয়ে পারদর্শী হয়ে থাকেন, তাহলে সেটি অন্যদের শেখান। ফলে আপনি নিজে ও আপনার শিক্ষার্থী প্রত্যেকেই উপকৃত হবেন।

আরও পড়ুন- টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়

২. কোচিংঃ-

ছাত্র জীবনে কোচিং অসাধারণ একটি মাধ্যম হতে পারে। বলা যায়, এটি টিউশনির উপরের ধাপ। যদি আপনি বাসায় বাসায় পড়ানোকে অপছন্দ মনে করেন বা অন্য কোনো সমস্যা থাকে তাহলে আপনি নিজেই একটি কোচিং সেন্টার চালু করতে পারেন।

তবে, ভাল মানের একটি কোচিং সেন্টার শুরু করার জন্য আপনাকে কিছু টাকা ইনভেস্ট করতে হতে পারে। যদি আপনার ইনভেস্ট এর সামর্থ্য না থাকে তাহলে অন্যদের কোচিং সেন্টারে শিক্ষক হিসেবে জয়েন হতে পারেন। কিছু টেকনিক প্রয়োগ করে আপনি এই সিস্টেমে অনেক টাকা আয় করতে পারেন।

৩. ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয়ঃ-

বর্তমানে অনেকেই ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং পেশাকে বেছে নিয়েছেন। এমনকি আমি নিজেও এরকম কিছু করার চেষ্টা করছি। এটি শুধুমাত্র ছাত্র জীবনের জন্য নয়, এটি আপনার পরবর্তী (কর্ম) জীবনেও অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। আর যদি আপনি মোবাইল/কম্পিউটার ব্যবহারের পোকা হয়ে থাকেন বা ঘরকুনো হয়ে থাকেন তাহলে এটিই আপনার জন্য সবচেয়ে সঠিক পদ্ধতি।

বাংলাদেশে অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন যারা লেখা-পড়ার পাশাপাশি এই কাজ করে অনেক টাকা আয় করছেন। আবার অনেকেই রয়েছেন যারা লেখা-পড়া শেষ করার পর চাকুরি বা ব্যবসা করার পরিবর্তে নিজের পেশা হিসেবে এটিকে বেছে নিয়েছেন। নিজেকে বেকারমুক্ত করছেন এমনকি পরিবারের ভরণ-পোষণ মেটাতে সক্ষম হচ্ছেন।

আরও পড়ুন- ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করার সেরা কয়েকটি টিপস

৪. ব্লগিং করে টাকা আয়ঃ-

ছাত্র জীবনে ব্লগিং করেও টাকা আয় করা যায়। সকল সফলতার মূলে থাকে চেষ্টা, সাধনা, ধের্য্য ও অক্লান্ত পরিশ্রম। ঠিক তেমনি যদি আপনি ব্লগিং করে টাকা আয় করতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে প্রথমে আপনাকে পরিশ্রম দিয়ে সেটি প্রস্তুত করতে হবে। কিন্তু একবার টাকা আয় শুরু হলে পরবর্তীতে আর তেমন সমস্যা বা কষ্ট করতে হয় না।

৫. ইউটিউবিং করে টাকা আয়ঃ-

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা যায় এটি এখন সকলেই জানে। ছাত্র জীবনে টাকা আয় করতে আপনিও এটিকে বেছে নিতে পারেন। ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে হলে আপনাকে একটি চ্যানেল তৈরি করতে হবে এবং ভাল মানের কিছু ভিডিও আপলোড করতে হবে।

আপনার যা কিছু জানা আছে, যেই বিষয়ে আপনি অভিজ্ঞ বা আপনি যা করতে পছন্দ করেন সেটাই আপনার চ্যানেলে ভিডিও তৈরি করে আপলোড করতে পারেন। যেমন- আপনি ছাত্র হিসেবে ইংরেজি গ্রামার, বাংলা ব্যাকরণ, গণিত বা আরও জটিল বিষয়গুলো সম্পর্কে টিউটরিয়াল তৈরি করতে পারেন। কিংবা আপনি খেলা-ধুলা পছন্দ করেন সেই বিষয় সম্পর্কে সমসাময়িক আলোচনা করতে পারেন বা আপনি ঘুরতে/ভ্রমণ করতে পছন্দ করলে সেটি নিয়ে ব্লগ ভিডিও তৈরি করতে পারেন।

আরও পড়ুন- সবসময় খুশি থাকার উপায় ১০টি কার্যকরি টিপস

৬. ফেসবুক থেকে টাকা আয়ঃ-

ফেসবুক থেকেও আপনি বিভিন্নভাবে টাকা আয় করতে পারেন। প্রথমত আপনি একটি পেজ তৈরি করে সেটিতে ইউটিউবের মত ভিডিও আপলোড করে টাকা আয় করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি একটি গ্রুপ বা পেজ খুলে সেটিতে কিছু ফলোয়ার বৃদ্ধি করে জনপ্রিয় করে তুলতে পারলে টাকা আয় করার অসংখ্য সুযোগ পেতে পারেন।

যেমনটি আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এই কাজটি আপনার পেজ বা গ্রুপ থেকে খুবই সহজে করতে পারবেন। পাশাপাশি আপনি নিজেও চাইলে আপনার ব্যবসা চালু করতে পারেন ফেসবুক-কে কেন্দ্র করে।

৭. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ-

যদি আপনি লেখা-পড়ার পাশাপাশি মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। এটিতে আপনার কাজের সাথে সাথেই টাকা পেয়ে যাবেন।

যদি অনলাইনে কোথাও আপনার নিকট অনেক অডিয়েন্স বা ব্যাক্তি থাকে তবেই এটি আপনি শুরু করতে পারেন। সেটি হতে পারে ফেসবুক গ্রুপ/পেজ, ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, হোয়াটস-অ্যাপ গ্রুপ, ইমু গ্রুপ বা টেলিগ্রাম চ্যানেল/গ্রুপ ইত্যাদি।

আপানাকে অন্য কারোর পণ্য বিক্রি করে দিতে হবে বা লিংক শেয়ার করতে হবে। যদি কেউ আপনার শেয়ার করা লিংক থেকে কোনো পণ্য ক্রয় করে তাহলেই আপনি সেই কোম্পানির কাছ থেকে বিক্রিত পণ্যরে প্রফিটের উপর কিছু বোনাস পেয়ে যাবেন।

আরও পড়ুন- গুগল এডসেন্স পাবার আগে এবং পরে

৮. ফটোগ্রাফিঃ-

মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে আমরা অনেকই পছন্দ করি। মোবাইলে ছবি তোলে না, এরকম লোকের সংখ্যা এখন নেহায়েত নেই বললেই চলে। অনেকেই শখ করে এই কাজটি করে থাকি। কিন্তু আপনি এই ছবিগুলো কিছু ওয়েবসাইটে বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন।

যদি আপনি প্রফেশনাল ছবি তুলতে পারেন তাহলেই কিছু ওয়েবসাইটে আপনি ছবিগুলো বিক্রি করতে পারবেন। এর জন্য আপনার ভাল কোনো DSLR ক্যামেরা থাকতে হবে না। আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটির মাধ্যমেই এই কাজটি সম্ভব। যদি আপনি এটিকে টাকা আয়ের মাধ্যম হিসেবে নিতে পারেন তাহলে আপনি একজন ফটোগ্রাফারও হয়ে যেতে পারেন।

৯. ওয়েটারঃ-

ছাত্র জীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করেও টাকা আয় করার সুযোগ রয়েছে। আপনি চাইলে ভাল কোনো রেস্টুন্টে প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য ওয়েটার হিসেবে কাজ করতে পারেন। এতে আপনার কাজের পাশাপাশি কাজ শিখাও হয়ে যাবে।

হয়ত, আমরা অনেকেই বিভিন্ন সিনেমা বা নাটকে এরকম দৃশ্য দেখে থাকি। বিষয়টি বাস্তবেও সম্ভব। এভাবে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করে আপনি দক্ষতা অর্জন করে নিজেও একটা সময় ভাল একজন ব্যবসায়িক হতে পারেন।

১০. সেলস ম্যানঃ-

বর্তমানে অনেক দোকানে বা সুপার শপগুলোতে সেলস ম্যান এর প্রয়োজন হয়। আপনিও আপনার অবসর সময়ে এসকল প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারেন। এটির মাধ্যমেও কিন্তু আপনার অভিজ্ঞতা অর্জন হবে যা ভবিষ্যৎতের জন্য অনেক কাজে আসবে। পাশাপাশি আপনার ছাত্র জীবনে কিছু টাকা আয়ও হবে।

১১. ডে-কেয়ারিংঃ-

আধুনিক এই ব্যাস্ততার যুগে অনেক বাবা-মা চাকুরি বা ব্যবসার কাজের কারণে বাহির থাকেন এবং সন্তানদের দেখা-শুনা করার জন্য ডে-কেয়ার কে বেছে নিচ্ছেন। এর ফলে ডে-কেয়ার এর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।

আপনি এরকম একটি প্রতিষ্ঠানেও পার্ট-টাইম চাকুরি নিতে পারেন। বাচ্চাদের সাথে সময়ও কাটবে আবার মাস শেষে কিছু টাকাও আয় হবে।

আরও পড়ুন- অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে আমাদের কিছু ভুল ধারনা

১২. কল সেন্টারঃ-

কলসেন্টারে কাজ করেও আপনি টাকা আয় করতে পারেন। যদি আপনার উচ্চারণ ও বাচনভঙ্গি ভালো হয় এবং আপনি সুন্দরভাবে কথা বলার অভিজ্ঞতা রাখেন তবেই আপনি এই ধরনের কাজ করতে পারবেন। কিছু কিছু কোম্পানির কাছ থেকে আপনি চাইলে এই কাজটি অফিসের পরিবর্তে আপনার বাসায় বসেও করতে পারবেন।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথাঃ ”ইচ্ছা থাকিলে, উপায় হয়” যদি আপনার প্রবল ইচ্ছা থাকে এবং উদ্দেশ্য সৎ হয় তাহলে আপনি যেকোনো কাজেই সফলতা পাবেন। ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার আরও অনেক উপায় রয়েছে। আমি শুধুমাত্র কিছু জনপ্রিয় উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি।

আমি আশা করছি, আপনি উপরোক্ত যেকোনো একটি পদ্ধতিকে কেন্দ্র করে আপনার জীবনে সফলতা পাবেন ইন-শা-আল্লাহ! তবে, এই কাজগুলো শুধুমাত্র ছাত্রদের জন্য নয়, চাইলে ছাত্রীরাও করতে পারবেন। ভাষার সৈান্দর্য্য় রক্ষার্তে আমি ছাত্র বলতে ছাত্র/ছাত্রী উভয়কেই বুঝিয়েছি। তাছাড়া কর্ম জীবনেও এগুলোর গুরুত্ব অনেক।

👉 এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে কমেন্টস করতে পারেন। Bondhu24 এর সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

About Bondhu24

Check Also

How to be smart

How to be Smart? Smartness 12 Tips

Becoming “smart” or intelligent is a process that involves continuous learning, critical thinking, and developing …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *