Breaking News

ঔষধ ছাড়া স্বাস্থ্য ভাল রাখার ২০টি কার্যকরী উপায়

স্বাস্থ্য ভাল রাখার মূলমন্ত্র হলো খাদ্য ও মানসিক প্রশান্তি। তবে মানব জীবনে শান্তি বা স্বাস্থ্যের প্রশান্তি এমনিতেই আসে না, শান্তি কিনতে হয়। তবে এটি অর্থ দিয়ে নয় বরং ত্যাগ দ্বারা (Peace buy by sacrifice) কিনতে হয়। তাই আজকে আমরা জানব ঔষধ ছাড়া স্বাস্থ্য ভাল রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস সম্পর্কে।

আমাদের মতো স্বল্পন্নোত দেশের বেশীর ভাগ লােকই ৪০ বছর পেরিয়ে যাবার পর শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে তারপর সতর্ক হই ও ডাক্তার দেখাই এবং স্বাস্থ্য বিধি পালন করা শুরু করি। ফলে সৃষ্টিকর্তা আমাদের কাংক্ষিত বয়স পর্যন্ত বাচিয়ে রাখেন না। তাই ছোট বেলা, ছাত্র জীবন, যৌবন বয়স থেকে স্বাস্থ্য জ্ঞান রেখে সচেতন হলে রােগের আক্রমন কম হবে এবং সুস্থ জীবন-যাপন করা সম্ভব। অতএব সুস্থ জীবন-যাপন ও স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন।

ঔষধ ছাড়া স্বাস্থ্য ভাল রাখার কার্যকরী উপায়ঃ-

১. জ্ঞানার্জন ও মননিয়ন্ত্রণঃ-

জ্ঞানার্জন, শৃঙ্খলাবদ্ধতা, সচেতনতা ও মন-নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়। মানুষের সুখ নির্ভর করে সু-স্বাস্থ্যের উপর। অনেক বাড়ি-গাড়ি, টাকা-পয়সার মালিকেরও স্বাস্থ্য ভাল না থাকলে শুধু বাড়ি-গাড়ি সুখ দিতে পারে না। মহামূল্যবান এই স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য নিয়মানুবর্তিতার কোন বিকল্প নেই।

স্বাস্থ্য শুধু ভাল ভাল খাবারের উপরই নির্ভর করে না। পরিবেশগত কারণে মানুষের মন-মানসিকতা ভাল রাখতে না পারলেও স্বাস্থ্য সুস্থ থাকে না। এজন্য প্রয়ােজন প্রচুর জ্ঞান, নতুন নতুন চিন্তাধারা, শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা।

মানুষ যে যে স্থানে অবস্থান করে সেখানের পরিবেশসহ সব কিছুকে স্বাভাবিক ভাবতে হয় এবং সাথে সাথে দৃঢ় মনােবল রাখতে হয় এবং মনে মনে এই ধারনা সর্বদা বজায় রাখা প্রয়ােজন যে সব কিছুকেই নিজে স্বাভাবিক করে নিব এবং অন্যান্য মানুষ অন্যায় ব্যবহার/অন্যায় কাজ করলেও তার সাথে খারাপ ব্যবহার করব না, খারাপ কাজ করব না, কেউ খারাপ হলে তার মত আমিও খারাপ হতে পারি না।

এ ধারণার সাথে সাথে অন্যায় কারীকে বুঝানাের চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু সে সু-পথে না এলেও মন খারাপ করা উচিত নয় এবং ধৈর্যের সাথে মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মন নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে নিম্নোক্ত কথাগুলাে মনে রেখে রীতিমত পালন, অনুসরণ করলে মন ও স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।

স্বাস্থের অধিকাংশ রোগ সৃষ্টি হয় মন থেকে। যখন আপনি মনে মনে কোনো বিষয় নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করবেন তখন আপনি মানসিক সমস্যায় পতিত হবেন এবং মানসিক সমস্যা আপনার ভিতরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নষ্ট করার পাশাপাশি গোপনীয় কিছু রোগের সৃষ্টি করে থাকে। তাই সর্বদা চেষ্টা করুন মনকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য, মন থেকে নিজেকে হাসি-খুশি রাখার জন্য।

২. স্বাভাবিক জীবনঃ-

বিপদে মনে করা উচিৎ নয় যে, সব কিছু হারিয়ে গেছে। এতে মন বেশী নিরাশ হয়। আর যদি মন নিরাশ থাকে সেক্ষত্রে আপনি অতি দ্রুত মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। মনে রাখুন, পার্থিব জীবনের প্রত্যেকেরই সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং সেটি আবার শেষও হয়ে থাকে। কোনো সমস্যায়ই স্থায়ী নয়। সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত প্রাকৃতিক নিয়মে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করলে অকালে জীবন প্রদীপ নিভে যায় না।

৩. হাঁটা ও ব্যায়ামঃ-

সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়মিত অত্যন্ত ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটা-চলা ও ব্যায়াম করুন। হাঁটার সময় সমতল জায়গায় প্রফুল্ল মনে হাঁটতে হবে। প্রতিদিন ব্যায়ামের মাধ্যমে আপানার শরীর সুস্থ থাকবে সেই সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। হাটার মতো কোনো জায়গা না পেলে বাসায় ইয়াগো করতে পারেন। সেই সাথে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭/৮ ঘন্টা ঘুমানাের চেষ্টা করুন।

আরও পড়ুন- জীবনের জন্য ক্ষতিকর কিছু কাজ

৪. নিয়মিত খাবার খাওয়াঃ-

সকালে, দুপুরে ও রাতে নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত খাবার খেতে হবে। যেমন- পরিশ্রমী বয়স্ক নারী দিনে ২,২০০ ক্যালরী এবং পরিশ্রমী পুরুষ ২,৫০০ ক্যালরী পরিমাণ খাদ্য খেতে হবে। খাবারের তালিকায় অবশ্যই পুষ্টির পরিমাণ বেশি ওরকম খাবার রাখা চাই। সেই সাথে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। তবে খাবার গ্রহণ করার সাথে সাথে পানি খাওয়া যাবে না। খাবার গ্রহণ করার ৩০-৪০ মিনিট পর পানি পান করুন। চেষ্টা করুন, সকাল বেলা ঘুম থেকে খালি পেটে এক গ্লাস পানি পান করার।

৫. পরিশ্রমঃ-

মনে রাখা প্রয়োজন যে, প্রতিভার এক ভাগ প্রেরনা থেকে হয় আর ৯৯ ভাগই পরিশ্রম থেকে আসে। সম্পদ কোনো দিন সভ্যতা আনতে পারে না। কিন্তু সভ্যতা সম্পদ আনতে পারে। স্বার্থপর ব্যক্তিরা যা দেয় তার চেয়ে বেশী আশা করে। সমালােচককে কখনও শত্রু ভাবা উচিত নয় সে বন্ধুও বটে। অপরের প্রতি বিশ্বস্ত হতে হলে আগে নিজের বিশ্বস্ত হতে হয়।

যারা বেশী জানে বলে ধারনা করে তারা খুবই কম জানে। প্রাথমিকভাবে কেউ মূল্য না দিলেও আমি আমার নীতিতে অটল থাকব ও সৎ কাজ করবাে-এ প্রতিজ্ঞা সকলের করা উচিত। ভালবাসা এবং যত্ন দিয়ে মরুভুমিতেও ফুল ফোটানাে সম্ভব।

তাই নিজেকে কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে গড়ে তুলুন। যদি নিজেকে অন্যের নিকট গুরুত্বপূর্ণ করে তৈরি করতে চান তাহলে, কাজ শিখে অধিক যোগ্যতা অর্জন করুন। আর নিজেকে অন্যের নিকট মূল্যবান হিসেবে পরিচিতি পেলে আপনি মন থেকে অনেক ভাল ও সুস্থ থাকতে পারবেন। ”যারা পরিশ্রমী, তাঁদের জন্য কোন কিছুই জয় করা অসাধ্য কিছু নয়। শিক্ষিত কোন ব্যক্তির জন্য কোন দেশই বিদেশ নয়। মিষ্ট ভাষীদের কোন শত্রু নেই।”

আরও পড়ুন- রোযা ভঙ্গের কারণ, রোযার মাকরুহ ও যেসকল কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না

৬. ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও নাঃ-

অসহ্য বলে কোন কিছুই নেই। কারণ সময়ে সব সহ্য হয়ে যায়। সর্বদা বিতর্কমূলক কথা এড়িয়ে চলবেন। কথায় আছে, তর্কে তর্ক বাড়ে। ’’ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও ন ’’ এ নীতি অনুসরণ করে চললে জীবন উন্নততর হয়।

বিশেষ করে, বাংলাদেশী তরুনদের বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ অল্পতে আমরা যেকোনো বিষয়ে লাফালাফি করি, সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আমাদের সিদ্ধান্তগুলো অনেকসময় ভুল প্রমাণিত হয়। আমরা দেশপ্রেমিক এতে কোনো সন্দেহ নেই কিন্তু দেশপ্রেমের প্রকাশটা আসলে কিভাবে করতে হয় কিংবা কোথায় করতে হবে সে সম্পর্কে আমাদের বাস্তব জ্ঞানটা এখনও পরিপক্ক হয়নি। তাই জীবনের ছোট থেকে বৃহৎ যেকোনো কাজ করার পূর্বে অবশ্যই আমাদেরকে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত।

৭. তাড়াহুড়ো নয়ঃ-

সকাল থেকে রাতে ঘুমানাের পূর্ব পর্যন্ত কোন কাজেই তাড়াহুড়ো করা যাবে না। তাড়াহুড়ো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। মনে রাখা প্রয়ােজন যে, তাড়াহুড়ো করে মানুষ যত লাভ বা সুবিধা করতে চায় তার চেয়ে লােকসান হয় বেশি। তাড়াহুড়ো না করে নিচের পদক্ষপগুলো অনুসরণ করুন-

  • প্রতিটি কাজের জন্য সময় ভাগ করে নিন।
  • পরে করব এই মুদ্রাদোষ স্বভাব ত্যাগ করুন।
  • প্রতিটি কাজের হিসেব কাগজে–কলমে রাখুন।
  • সম্ভব হলে দলগতভাবে কাজ করার চেষ্ট করুন।
  • কাজ করার সময় অবশ্যই সর্বাত্মক চেষ্টা রাখুন।

৮. Prevention is better than cure:-

অসুখ হলে ঔষধ খেয়ে ভাল হবাে এই ধারনা ত্যাগ করে পূর্ব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে অসুখই না হতে পারে। ইংরেজীতে একটা কথা আছে Prevention is better than cure (রোগ মুক্তির চেয়ে রােগ প্রতিরােধ উত্তম) অর্থাৎ “রােগ হলে, পরে মুক্তির জন্য ভাক্তার দেখাবাে, ঔষধ খাবাে”- এমন চিন্তা না করে রােগ সৃষ্টির পূর্বেই সতর্কতার সাথে জীবন যাপন ও উত্তম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

প্রতি বছর ঋতু পরিবর্তনের সময়ে শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ঋতু পরিবর্তনের আগেই রােগ প্রতিরােধে সতর্ক থাকতে হবে। মানুষের কোনো অসুখ ঔষধে সম্পূর্ণ নির্মূল হয়না। তবে অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রন করা যায় বা অসুখ কমানাে যায় মাত্র। দাত থাকতে দাতের মর্যাদার মত সব কিছুই নিজেরই করতে হবে। তাই সবার আগে প্রতিরােধের সর্বোচ্চ চেষ্টা করলে ঔষধের ঝামেলা পােহাতে হবে না।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই মহা নেয়ামতের (সুস্থতার) কদর করতে বলেছেন। এক হাদীসে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা পাঁচটি অবস্থায় পতিত হওয়ার পূর্বে পাঁচটি জিনিসকে মূল্য দাও।

১. বৃদ্ধ হওয়ার পূর্বে যৌবনকে।
২. রোগ আক্রমণ করার পূর্বে সুস্থতাকে।
৩. কর্মব্যস্ততার পূর্বে অবসর সময়কে।
৪. মৃ্ত্যু আসার পূর্বে জীবনকে।
৫. দরিদ্রতার পূর্বে সচ্ছলতাকে।
(আলমুসতাদরাক হাকিম, হাদীস : ৭৯১৬)

আরও পড়ুন- ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার উপায়

৯. আশা ও ধৈর্য্যঃ-

যার স্বাস্থ্য আছে তার আশা আছে, আর যার আশা ও স্বাস্থ্য আছে তার সব কিছুই আছে। যেখানে আশা শেষ সেখানেই মানুষের ধ্বংশ শুরু। যার ধৈর্য আছে সে যা আশা করে তা পেতে পারে। মনে রাখতে হবে, “ধৈর্য এমন একটি গাছ, যার সারা গায়ে কাটা কিন্তু ফল অতি সুস্বাদু” (আল হাদিস)।

তাই প্রতিটি কাজকে গুরুত্ব দিন ও সেই কাজে সফলতার আশা রাখুন। যদি কখনও কোনো কিছুতে ব্যার্থ্য হয়ে পড়েন তবুও সেটিতে নিরাশ হবেন না। সম্ভব হলে কাজটি পুনরায় করুন। অথবা এটা মনে করুন, হয়তো কাজটিতে আপনার কোথাও ভুল ছিল।

১০. নিজের ভুল ধরাঃ-

অধিকাংশ মানুষ সাধারনত নিজে নিজের ভুল বুঝতে পারে না, কিন্তু বাস্তববাদী লােক নিজে নিজের সমালােচনা করতে পারে বলে নিজের ভুলও সে বুঝতে পারে। সকলেরই উচিত নিজের ভিতরে বাস্তব মনস্তাত্বিক জ্ঞান সঞ্চার করা। মনস্তাত্বিক জ্ঞান থাকলে নিজের ভুল-ত্রুটি বুঝা সহজ হয় এবং সে মতে চললে শান্তির দ্বার উন্মােচিত হয়।

অতএব, নিজের জীবনের কোথায় কি ভুল রয়েছে সেগুলো খুজে বের করুন ও সমাধান করুন। ভুল কাজের জন্য কখনও নিজেকে ছোট মনে করবেন না। বরং নিজেকে ছোট মনে করুন, যদি সেই ভুলটি শোধরাতে না পারেন। ”মানুষ মাত্রই ভুল করে, আর বেকাররা সে ভুল সংশোধন করতে চেষ্টা করে না।” (বার্নস)

১১. অল্পতে খুশী থাকাঃ-

আশা করা ভাল কিন্তু পেতেই হবে এরূপ আশা করা ভাল নয়, যা না পেলে মানুষ হতাশ হয়। তাই স্বাভাবিক আশা করতে হবে। পৃথিবীতে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে সুখী হয় যে অল্পে সন্তুষ্ট থাকে এবং কম আশা করে। মনে রাখবেন, মানব জীবনে চাহিদার শেষ হয় না।

তবে, অল্প আশা মানে এই নয় যে, আপনি সামান্য কিছু নিয়ে নিজের জীবনকে ছোট করে রাখবেন। আমাদের এই জীবনটি ছোট হলেও জীবনের প্রয়োজনীয়তা অনেক। তাছাড়া বর্তমান প্রতিযোগিতার যোগ। আপনাকে প্রতিযোগীতা করে এই যুগে বেচে থাকতে হবে। তাই যেটা আপনার প্রয়োজন সেটা অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন, সফল হবার আশা রাখুন। কিন্তু যেটা আপনার পক্ষে অর্জন করা সম্ভব নয় বা যেটা আপনার তেমন উপকারে আসবে না তা আশা না করাই ভাল।

১২. আত্মসমালােচনা/সমালােচনাঃ-

অহেতুক বা শুনা কথায় কারও সমালােচনা করা ভাল নয়। আমি যার সমালােচনা করবাে হয় সে আমার এক ভাই কিংবা বােন নামের মানুষ। পৃথিবীর সকলের মন মানসিকতা আমার মত হবে এমনটা আশা করা ঠিক হবে না। বিভিন্ন পরিবেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খা ও ব্যবহারে তারতম্য থাকতে পারে। কিন্তু কারও সাথে খারাপ ব্যবহার না করে বরং এ জগতের মানুষ বিচিত্র তা ভেবে মনটাকে প্রশান্তি দেয়া উচিত।

জীবনের শেষ পরিণতি তথা একদিন মৃত্যু নিশ্চিত এ কথা ভাবলে এবং আত্ম-সমালােচনা করলে প্রতিপক্ষের উপর চরম প্রতিশােধের মানসিক চাপ কমবে এবং জীবনের বাকী সময়টাও নিরিবিলি শান্তিতে কাটানো সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন- প্রয়োজনীয় কিছু অ্যাপস

১৩. সাহসঃ-

সাহসেই কপাল ফেরে তবে তা সঠিকভাবে সময়ােপযােগী প্রয়োগ করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, অনেকে সাহসের অভাবে কোনো কিছুতে ভয় পেয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অপরদিকে অনেকে সাহসের বলে অনেক কঠিন কাজকে জয়ী করে জীবনের মোর পরিবর্তন করে নিচ্ছে। তাই মনে সবসময় সাহস নিয়ে চলা উচিত।

১৪. সংকীর্ণতা পরিহার করা ও নিজেকে সেরা ভাবাঃ-

সংকীর্ণতার বসতী হয়ে কেউ আমার অন্যায় সমালােচনা করলেও তার সমালােচনা করব না বরং মন ভাল রাখার জন্য ভাববাে যে তারা বুঝে না, তাই অন্ধকারে ডুবে সমালোচনায় মগ্ন আছে।, আমি তাে তাদের থেকে উত্তম তাই তাদের কোনো সমালােচনা আমি করতে পারি না। কিন্তু নিজেকে সেরা ভেবে আবার হিংসার আশ্রয় নেয়া যাবে না। তবে ন্যায় নীতির দিকে তাকিয়ে সৎকাজ করে নিজেকে সেরা ভাবতে অবশ্যই কোন দোষ নেই।

১৫.মানুষের কল্যাণঃ-

সৃষ্টি কর্তার আদেশ মেনে চলার জন্য সঠিক ধর্মজ্ঞান অর্জন ও ধর্ম চর্চা করতে হবে। মানুষের কল্যাণেও সময় এবং সামর্থ থাকলে অর্থ ব্যয় করলে শরীরে মানসিক শক্তি বাড়ে, ফলে মনে প্রশান্তি আসে। চেষ্টা করুন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে মানুষের উপকারে আসতে।

আমাদের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য শুধুমাত্র শারীরিকভাবে স্বাস্থবান হলেই চলবে না। অনেকসময় স্বাস্থ্য ভাল থাকা মন-মানসিকতার উপরও নির্ভর করে। আপনি যখন মানুষের কল্যাণে সামান্য হলেও কিছু করতে পারবেন তখন আপনি ভিতর থেকে এক অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব করতে পারবেন।

১৬. লোভে পাপ, পাপে মৃত্যুঃ-

’’লােভে পাপ, পাপে মৃত্যু’’ এটা মনে রেখে প্রত্যেকের ন্যায়-নীতি অনুসরন করে চলা উচিত। লােভ, অহংকার ও বক্রতা ত্যাগ করে দৈনিক জীবন যাপন করতে হবে। মিথ্যা কথা, গীবত করা এবং পরচর্চা/সমালােচনা থেকে বিরত থাকলে জীবনে শান্তি আসে। কোনো কিছু অর্জন করতে হলে সেটার জন্য নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হয়। লোভ করে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না। কিছু কিছু সময় লোভ করে কোনো কিছু অর্জন করতে পারলেও সেটি স্থায়ী হয় না।

অপরদিকে নিজের কোনো গুণ বা ক্ষমতার কারণে কারো সাথে অহংকার করা উচিত নয়। অহংকারের পরিণতি কখনও ভাল কিছু হয় না। মনে রাখুন, শয়তান অহংকারের কারণেই চিরস্থায়ীভাবে নিজের ধ্বংশ ডেকে এনেছে।

১৭. সফলতা ও ব্যর্থতাঃ-

স্বাস্থ্য ভাল

পৃথিবীতে যারা সফল হয়েছেন তারা সকলেই ব্যার্থতার স্বাদ গ্রহণ করেছেন। তাই কখনও কোনো কাজে ব্যার্থ হলে মন খারাপ করা যাবে না। মনে রাখতে হবে “Failure is the pillar of success.”
আমার আগের ব্যর্থতা থেকে একটা জিনিশই শিখতে পেরেছি, সফল হওয়ার আগ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সফলতা আর ব্যর্থতা জীবনেরই অংশ। সব ভুলে কঠিন পরিশ্রম করে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই সফল হওয়া যাবে।

যারা জীবনে যত বেশি সফল তাদের জীবনে তত বেশি ব্যর্থতার গল্প রয়েছে। তাই ব্যর্থতাকে নিজের স্বম্বল করে আবারও নিজেকে চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখুন, ’’আপনি যত বেশি ব্যর্থ হবেন আপনার সফলতা তত নিকটবর্তী’’।

আরও পড়ুন- মার্ক জুকারবার্গ সম্পর্কে অজানা তথ্য সমূহ

১৮. রুটিন অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করাঃ-

রুটিন তথা নিয়ম মেনে চললে সকল জায়গাতেই সফল বা ভাল কিছু ঘটে। কাজেই আপনি নিজেকে স্বাস্থ্যগত ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে হলে সবকিছু রুটিন অনুযায়ী মেইনটেইন্স করতে হবে। সময়মতো ঘুম থেকে ‍উঠতে হবে, সময়মতো খাবার খেতে হবে, সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে। কাজের সময় ঘুম আর ঘুমের সময় খেলা করা যাবে না।

১৯. জীবন পুষ্প শয্যা নয়ঃ-

(জীবন পুষ্প শয্যা নয়) কথাটি সর্বদা মনে রেখে ছাত্রজীবন/কর্ম জীবন এমনকি অবসর জীবনেও ধৈর্য্য ধরে ও জ্ঞান খাটিয়ে চলতে হবে। অনেক সমস্যার মাঝেও স্বাস্থ্য ভাল রাখতে হলে মনকে সতেজ ও সজীব রাখার কৌশল অবলম্বন করতে হবে। এজন্যে জীবনের গৌরবময় আনন্দের কোনো ঘটনার কথা মাঝে মধ্যে মনে করুন/স্বরণে আনুন ও গৌরব বােধ করুন। আর মনকে রিফ্রেশ করুন, দেখবেন জীবনের অনেক সমস্যার মাঝেও ভাল আছেন।

২০. পৃথিবীটা খুবই কঠিন জায়গাঃ-

মনে রাখতে হবে যে, পৃথিবীটা খুবই কঠিন জায়গা। তাই সকল কিছুকেই নমনীয় ও স্বাভাবিক ভাবতে হবে। কোন কিছুতেই উত্তেজিত হওয়া যাবে না। উত্তেজিত মনে শান্তি থাকে না। মন নিরাশ করে একদিন টেনশনে থাকলে অনেক দিনের শরীরের আয়ু কমে যায় তাই টেনশন মুক্ত থাকার চেষ্টা করা দরকার। টেনশনে খাদ্য হজমের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় এবং গ্যাস্ট্রিক আলসারসহ নানান রােগ দেখা দেয়।

বন্ধুরা, আশা করছি আজকের পোস্টটি ঔষধ ছাড়া স্বাস্থ্য ভাল রাখার ক্ষেত্রে আপনার জন্য অনেক উপকারী আসবে। পোস্টটির মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই লাইক দিয়ে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। সবসময় সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে ভালো থাকবেন। আমাদের আরও অন্যান্য পোস্টগুলো ভাল লাগলে অবশ্যই পড়তে পারেন। পরবতীর্তে আমাদের ওয়েবসাইটে আসার অনুরোধ করছি। আজ এই পর্যন্তই

———– ধন্যবাদ! ———–

About Bondhu24

Check Also

১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ

১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ ; যা নিত্যদিন ব্যবহারযোগ্য

আজকের আর্টিকেলে ১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ নিয়ে হাজির হয়েছি যা দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকেই ব্যবহার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *