Breaking News

ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানোর উপায় | How to Increase Wifi Speed?

অধিকাংশ ওয়াইফাই ব্যবহারকারী ওয়াইফাই স্পিড নিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন এবং ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানোর প্রয়োজন বোধ করেন। ফলে অনলাইনে ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানোর উপায় বা কিভাবে ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানো যায় তা খুঁজে বেড়ান।

আজকের পোস্টে আমরা ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানোর কিছু কার্যকরী উপায় উল্লেখ করবো। যা প্রয়োগ করে অপেক্ষাকৃত বর্তমান সময়ের চেয়ে ওয়াইফাই স্পিড অনেকটাই বৃদ্ধি করতে পারবেন।

তবে, মূল আর্টিকেলে প্রবেশ করার পূর্বে বলতে হচ্ছে যে, আর্টিকেলে উল্লিখিত নিয়ম অনুসরণ করে আপনি ঠিক ততটুকুই স্পিড পেতে পারেন ওয়াইফাই প্রোভাইডার (আইএসপি) আপনাকে যতটুকু স্পিড প্রোভাইড করবে বা আপনি যতটুকু স্পিড সাবস্ক্রিপশন করবেন। কিন্তু কখনোই আপনার লিমিটের চেয়ে বেশি স্পিড পাবেন না। অর্থাৎ যদি আপনার ওয়াইফাই স্পিড ১০ এমবিপিএস হয়ে থাকে তাহলে কখনোই সেটিকে ১২ বা ১৫ এমবিপিএস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে না।

স্বাভাবিকভাবে আমাদের রাউটারে যত এমবিপিএস প্রোভাইড করে থাকে বিভিন্ন কারণে আমরা প্রোপারলি সেই স্পিড পাই না। যদি আপনি এই ধরনের সমস্যার মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের উপায় সমূহ প্রয়োগ করার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান পাবেন ও সর্বোচ্চ ওয়াইফাই স্পিডে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।

আরও পড়ুন- অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে আমাদের কিছু ভুল ধারনা

ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানোর উপায়ঃ-

ওয়াইফাই ‍স্পিড বৃদ্ধি করার অনেক উপায় রয়েছে। তবে, সকল উপায় একইভাবে কাজ করে না। নিম্নে অধিক কার্যকরী কিছু উপায় শেয়ার করা হলো, আশা করছি আপনি উপকৃত হবেন।

১. রাউটার সঠিক স্থানে বসানোঃ-

অনেক ওয়াইফাই ব্যবহারকারী তাদের রাউটার-কে রুমের কোনো এক কোনায় ফেলে রাখেন। ফলে উক্ত রুমের বিপরীত রুমে ওয়াইফাই স্পিড পৌছার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয় বা স্পিড অনেক কম পাওয়া যায়।

কাজেই আপনার রাউটার-কে বাসার ফাকা বা খোলা-মেলা স্থানে রাখার চেষ্টা করুন। যাতে করে সকলের নিকট ওয়াই-ফাই স্পিড সহজভাবে পৌছাতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই বৃষ্টি বা রোদে রাখা যাবে না ও যেসকল ডিভাইস থেকে ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক বিকিরণ হয়; যেমন- মোবাইল, কম্পিউটার, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি ডিভাইস থেকে দূরে রাখতে হবে। এছাড়াও সম্পূর্ণ বাড়িতে ওয়াই-ফাই স্পিড সমানভাবে পাবার জন্য ৫/৬ ফুট বা উঁচু স্থানে রাউটার রাখতে পারেন।

২. ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি করাঃ-

বর্তমান সময়ের তুলনায় আগেকার যুগের পুরানো রাউটার গুলোতে কম ফ্রিকোয়েন্সি অর্থাৎ ২.৪ গিগাহার্টজ স্পিড ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে তৈরি প্রায় অধিকাংশ রাউটারে ডুয়াল ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়। ফলে প্রয়োজন অনুযায়ী রাউটারে ২.৪ গিগাহার্টজ কিংবা ৫ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা যায়।

যদি আপনার রাউটারটি পুরানো ভার্সন হয়ে থাকে তাহলে সেটিকে পরিবর্তন করতে পারেন। আর নতুন ভার্সন (ডুয়াল ব্যান্ড) হয়ে থাকলে ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়ে নিন। ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধির ফলে অটোমেটিক আপনার ওয়াইফাই স্পিড বৃদ্ধি পাবে।

তবে, ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি করাতে আরও একটি সমস্যা হতে পারে। যদি আপনার রাউটারের ফ্রিকোয়েন্সি ২.৪ গিগাহার্টজ হয়ে থাকে তাহলে আপনি উক্ত রাউটার থেকে স্পিড কিছুটা কম পেলেও এটি অনেক বেশি এরিয়া কাভার করবে। ফলে রাউটার থেকে অনেক দূরে অবস্থান করেও ওয়াইফাই কানেকশন পাবেন।

অপরদিকে যদি আপনার রাউটারের ফ্রিকোয়েন্সি ৫ গিগাহার্টজ হয়ে থাকে তাহলে আপনি উক্ত রাউটার থেকে অনেক বেশি স্পিড পেলেও পূর্বের তুলনায় এরিয়া কাভারেজ কম পাবেন। অর্থাৎ যদি আপনি ওয়াইফাই স্পিড বাড়াতে চান এবং অল্প জায়গায় ওয়াইফাই ব্যবহার করতে চান তাহলেই কেবল ফ্রিকোয়েন্সি বাড়াতে পারেন।

আরও পড়ুন- ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার সেরা উপায়

৩. অপ্রয়োজনীয় ডিভাইস বন্ধ রাখাঃ-

ওয়াইফাই স্পিড ভাল পাবার আরও একটি কার্যকরী উপায় হলো অপ্রয়োজনীয় ও অপরিচিত ডিভাইস থেকে ওয়াইফাই কানেকশন বন্ধ রাখা। বিশেষ করে, আপনি যখন গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ করবেন। যেখানে ওয়াই-ফাই স্পিড ভাল হওয়াটা জরুরি। তখন অপ্রয়োজনীয় ডিভাইস সমূহকে ওয়াই-ফাই কানেকশন থেকে ডিসকানেক্ট করে দিন।

স্বাভাবিকভাবে আমরা সকলেই এটি বুঝতে পারি; যদি, একটি রাউটার থেকে প্রতি সেকেন্ডে ১০ এমবিপিএস সার্ভ করা হয় এবং ডিভাইস সংখ্যা কম হয় তাহলে ওয়াইফাই স্পিড ভাল পাওয়া যাবে। পক্ষান্তরে যদি কানেক্টেড ডিভাইস সংখ্যা অনেক বেশি হয় তাহলে ১০ এমবিপিএস সকল ডিভাইসে বন্টন হয়ে যাবে এবং ওয়াইফাই স্পিড কম পাওয়া যাবে।

তাই, ওয়াফাই স্পিড ভালভাবে পাবার জন্য রাউটার-কে নিজের কন্ট্রোলে রাখুন এবং অপ্রয়োজনীয় ও অপরিচিত ডিভাইস সমূহকে ডিসকানেক্ট রাখার চেষ্টা করুন।

৪. ইন্টারনেট ক্যাবল ব্যবহার করাঃ-

ইন্টারনেট ক্যাবল ব্যবহার করা
ইন্টারনেট ক্যাবল ব্যবহার

এই পদ্ধতিটি কেবলমাত্র ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য কিংবা যদি আপনার স্মার্ট টিভি বা অন্য কোনো ডিভাইস থাকে যেটিতে ইন্টারনেট / ওয়াইফাই ক্যাবল ব্যাবহার করার সিস্টেম রয়েছে সেটিতে প্রয়োগ করতে পারবেন। ওয়্যারলেস এর মাধ্যমে ওয়াইফাই ব্যবহার করলে ওয়াই-ফাই স্পিড স্বাভাবিকভাবে কিছু কিছু সময় কম-বেশি হতে পারে।

তাই যদি প্রোপারলি স্পিড পেতে চান তাহলে ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করার জন্য ওয়্যারলেস এর পরিবর্তে ইন্টারনেট কেবল ব্যবহার করুন। অধিকাংশ অফিস-আদালতে আপনি হয়তো বিষয়টি অলরেডি নোটিশ করেছেন।

আরও পড়ুন- অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা

৫. রাউটার রিসেট ও বন্ধ করাঃ-

আমরা বিশ্রাম এর মাধ্যমে যেমনিভাবে নিজেদেরকে পরবর্তী দিনের কাজের জন্য প্রস্তুত করি, একইভাবে ইলেকট্রনিক ডিভাইসেরও বিশ্রাম বা রিসেট এর প্রয়োজন রয়েছে। যদি কোনো রাউটার একাধারে ২৪ ঘন্টা চলমান থাকে তাহলে স্বাভাবিকভাবে সেটি ভালভাবে কাজ করতে পারে না এবং ওয়াইফাই স্পিড স্লো হয়ে থাকে।

তাই ইন্জিনিয়ারদের মতে, ওয়াইফাই স্পিড বৃদ্ধি করতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অত্যন্ত একবার ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য রাউটার বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এতে করে রাউটার-টি রিফ্রেশ হয় এবং আবারও নতুনভাবে কাজ করতে পারে।

তাছাড়াও একটি রাউটার ক্রমান্বয়ে ব্যবহার করার ফলে এতে বিভিন্ন ধরনের ডেটা জমা হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে স্লো কাজ করতে শুরু করে। তাই অত্যন্ত ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে একবার রিসেট করে নেওয়া উত্তম। এমনকি রাউটার রিসেট করলে এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং পুরানো কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকলে অধিকাংশ সময় তা সমাধান হয়ে যায়।

৬. রিপিটার ব্যবহার করাঃ-

Wi Fi Repeater
ওয়াইফাই রিপিটার

যদি আপনি একই ওয়াইফাই রাউটার থেকে অনেক বেশি এরিয়া পর্যন্ত কানেকশন পেতে চান তাহলে রিপিটার ব্যবহার করতে পারেন। রিপিটার আপনার ওয়াইফাই এর রেন্জ দীর্ঘায়িত করতে সক্ষম। অনেক সময় আমাদের বাসার কিছু কিছু রুমের দেয়াল-কে ওভার করে ওয়াইফাই স্পিড পৌছাতে পারে না। এক্ষেত্রে রিপিটার ব্যবহার করে আপনি অনেক ভাল স্পিড পেতে পারেন।

আরও পড়ুন- সহজ উপায়ে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড বের করার নিয়ম

৭. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাঃ-

যদিও এটি ওয়াইফাই স্পিড বৃদ্ধি করতে তেমন কাজে আসবে না। তবুও আপনার ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড যদি সহজ হয় তাহলে যেকেউ খুবই সহজে আপনার ওয়াই-ফাই এর সাথে কানেক্টেড হতে পারবে ফলে ওয়াই-ফাই স্পিড বন্টন হবার কারণে সেটি স্লো হয়ে যাবে। তাই ওয়াই-ফাই এর স্পিড সঠিকভাবে পেতে হলে শক্তিশালী একটি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন ও পর্যাপ্ত সিকিউর রাখার চেষ্টা করুন। এমনকি কিছু দিন পর পর আপনার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।

শেষ কথাঃ- প্রিয় পাঠক, ’’ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানোর উপায়’’ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আপনি উপরোক্ত উপায় অবলম্বন করে ওয়াই-ফাই স্পিড বৃদ্ধি করতে পারবেন।

তারপরও যদি উপরোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে পর্যাপ্ত স্পিড না পেয়ে থাকেন তাহলে আইএসপি বা ওয়াইফাই সার্ভিস প্রোভাইডার এর সাথে যোগাযোগ করুন। ওয়াইফাই সম্পর্কিত কোনো ধরনের টেকনিক্যাল সমস্যা হলে সেটি তাহারা সমাধান করতে পারবে।

’’ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানোর উপায়’’ সম্পর্কিত ইনফরমেটিভ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। সবসময় সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে ভালো থাকবেন। আমাদের আরও অন্যান্য পোষ্টগুলো ভাল লাগলে অবশ্যই পড়তে পারেন। পরবতীর্তে আমাদের ওয়েবসাইটে আসার অনুরোধ করছি। আজ এই পর্যন্তই

———– ধন্যবাদ! ———–

About Bondhu24

Check Also

১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ

১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ ; যা নিত্যদিন ব্যবহারযোগ্য

আজকের আর্টিকেলে ১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ নিয়ে হাজির হয়েছি যা দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকেই ব্যবহার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *