Breaking News

অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা ইসলাম ও বাস্তবতার আলোকে

বিয়ের সঠিক বয়স কত? এবং অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা বা কি কি ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে আমাদের জানার কৌতুহলের শেষ নেই। বিয়ের সঠিক বয়স, বিয়ে করার উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে বিজ্ঞান ও ধর্মে কি বলা আছে এবং বাস্তবতা কতটুকু রয়েছে সেসকল বিষয় নিয়েই আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে।

যেহেতু বিয়ে মানব জীবনে একটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এর সাথে অর্থনৈতিক বিষয় জড়িত রয়েছে, তাই (বিশেষ করে ছেলেদের ক্ষেত্রে) অনেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করাকে সঠিক সময় মনে করে থাকেন। কিন্তু এই ধারণা সঠিক নয়।

কেননা, বর্তমানে একটা ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে তার জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় শেষ করে ফেলতে হয়। আর জীবনের অর্ধেকের পর এসে তার বিয়ে করার তেমন কোনো আগ্রহ বা প্রয়োজনীয়তা থাকে না। বরং জীবনের যেটুকু সময় সে বিয়ে না করে কাটিয়েছে এর জন্য অনেক সমস্যার মুখাপেক্ষী হতে হয়েছে এবং বৈবাহিক জীবনে আরও সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।

বিজ্ঞানও এটি সম্মত করে যে, একজন ছেলে বা মেয়ে প্রাপ্ত বয়ষ্ক হবার পর পর বিয়ে করার মাধ্যমে অনেক ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে। সেটি হতে পারে মানসিক ও শারীরিক। এমনকি ইসলাম ধর্মেও এই নির্দেশনা রয়েছে।

তাহলে অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা ও সেটির বাস্তবতা কতটুকু তা বিস্তারিত জানতে আজকের আর্টিকেলে আপনাকে স্বাগতম। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিয়ে করার উপকারিতা সহ প্রাসঙ্গিক বিষয়াবলি জানতে পারবেন ইন-শা-আল্লাহ!

আরও পড়ুন- ইউটিউব থেকে টাকা আয় কিভাবে?

বিয়ে করার উপকারিতা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

প্রিয় পাঠক, প্রথমে ইসলামিক নির্দেশনা সমূহ জেনে নিবো। অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَأَنكِحُوا۟ ٱلْأَيَـٰمَىٰ مِنكُمْ وَٱلصَّـٰلِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَآئِكُمْ ۚ إِن يَكُونُوا۟ فُقَرَآءَ يُغْنِهِمُ ٱللَّهُ مِن فَضْلِهِۦ ۗ وَٱللَّهُ وَٰسِعٌ عَلِيمٌۭ

অর্থঃ- তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সূরাহ- নূর, আয়াতঃ৩২)

অপরদিকে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, ﻳَﺎﻣَﻌْﺸَﺮَ ﺍﻟﺸَّﺒَﺎﺏِ ﻣَﻦِ ﺍﺳْﺘَﻄَﺎﻉَ ﻣِﻨْﻜُﻢُ ﺍﻟْﺒَﺎﺀَﺓَ ﻓَﻠْﻴَﺘَﺰَﻭَّﺝْ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُﺃَﻏَﺾُّ ﻟِﻠْﺒَﺼَﺮِ ﻭَﺃَﺣْﺼَﻦُ ﻟِﻠْﻔَﺮْﺝِ ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﻌَﻠَﻴْﻪِﺑِﺎﻟﺼَّﻮْﻡِ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻟَﻪُ ﻭِﺟَﺎﺀٌ

অর্থঃ- হে যুবসমাজ! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহের সামর্থ্য রাখে, তাদের বিবাহ করা কর্তব্য। কেননা বিবাহ হয় দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণকারী, যৌনাঙ্গের পবিত্রতা রক্ষাকারী। আর যার সামর্থ্য নেই সে যেনো রোজা পালন করে। কেননা রোজা হচ্ছে যৌবনকে দমন করার মাধ্যম। (বুখারী ৫০৬৫, মুসলিম ১৪০০)

এমনকি পিতা-মাতাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বের তাগিদ দিয়ে রাসূল (স.) অন্য এক হাদীসে বলেন, من وُلِدَ لَهُ وَلَدٌ فَلْيُحْسِنِ اسْمَهُ وَأَدَبَهُ فَإِذَا بَلَغَ فَلْيُزَوِّجْهُ فَإِنْ بَلَغَ وَلَمْ يُزَوِّجْهُ فَأَصَابَ إِثْمًا فَإِنَّمَا إثمه على أَبِيه

অর্থঃ- তোমাদের মাঝে যার কোনো (পুত্র বা কন্যা) সন্তান জন্ম হয়, সে যেন তার সুন্দর নাম রাখে এবং তাকে উত্তম আদব কায়দা শিক্ষা দেয়। যখন সে বালেগ অর্থাৎ সাবালক/সাবালিকা হয়, তখন যেন তার বিয়ে দেয়। যদি সে বালেগ হয় এবং তার বিয়ে না দেয় তাহলে, সে কোনো পাপ করলে উক্ত পাপের দায়ভার তার পিতার উপর বর্তাবে। (বাইহাকি ৮১৪৫)

আরও একটি হাদীস শরীফে রাসূল (স.) বলেন, ثَلَاثَةٌ حَقٌّ عَلَى اللَّهِ عَوْنُهُمْ: المُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، وَالمُكَاتَبُ الَّذِي يُرِيدُ الأَدَاءَ، وَالنَّاكِحُ الَّذِي يُرِيدُ العَفَافَ

অর্থঃ- তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ তায়ালার জন্য কর্তব্য হয়ে যায়। যথা-

  • আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় জিহাদকারী।
  • চুক্তিবদ্ধ গোলাম যে তার মনিবকে চুক্তি অনুযায়ী সম্পদ আদায় করে মুক্ত হতে চায়।
  • ওই বিবাহিত ব্যক্তি যে (বিবাহ করার মাধ্যমে) পবিত্র থাকতে চায়। (তিরমিজি-১৬৫৫, নাসায়ি-৩২১৮, ৩১২০, সহিহ ইবনে হিব্বান-৪০৩০, বায়হাকি)

সুতরাং, বুঝা গেলো ইসলাম ধর্ম এটাই সরাসরি নির্দেশ করছে যে, বিয়ের বয়স হলে বিয়ে করে ফেলুন। অর্থাৎ অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা রয়েছে। যেহেতু ইসলাম এই ব্যাপারে নির্দেশ করছে, আর ইসলাম ধর্মের প্রতিটি নির্দেশনায় মানবতার কল্যাণ নিহীত রয়েছে।

উপরোক্ত কুরআনের নির্দেশনা ও হাদীস থেকে কয়েকটি বিষয় আবারও একটু বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করছি-

  • আমরা অনেকেই আর্থিক সমস্যার কথা ভেবে বিয়ে করছি না কিংবা অনেক পিতা-মাতা তার সন্তানদের বিয়ে দিতে রাজি নন। কিন্তু আল্লাহ নিজেই বলছেন যে, তিনি বিয়ের মাধ্যমে আমাদেরকে সচ্ছল করে দিবেন।
  • একজন মুসলিম ও মুমীন হিসেবে অবশ্যই আমাদের চরিত্রকে হেফাজত রাখার জন্য বিয়ে করাটা আবশ্যক।
  • সর্বোপরি, যদি বিয়ে করার সামর্থ না থাকে তাহলে রোজা রাখার নির্দেশ রয়েছে। রোজা মানে হচ্ছে বিরত থাকা। সুতরাং রোজা আদায় করার মাধ্যমে আমাদেরকে শুধুমাত্র খাবার থেকে নয় অন্যান্য সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

অতএব, যারা ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলেন বা চলার চেষ্টা করেন আশা করছি আপনারা এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। তবুও বাস্তবতার আলোকে অল্প বয়সে বিয়ে করার উপাকারিতা সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও যুক্তি উল্লেখ করছি।

আরও পড়ুন- ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করার সেরা কয়েকটি টিপস

অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতাঃ-

অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা

যৌন চাহিদা পূরণঃ- আমাদের পেটের ক্ষুদার পাশাপাশি প্রাপ্ত বয়স্ক হবার পর মনের ক্ষুদার সৃষ্টি হয়। যেটিকে আমরা সেক্স বা যৌন চাহিদা বলে থাকি। পেটের ক্ষুদা নিবারণের জন্য আমাদের যেমনি খাবারের প্রয়োজন হয় তেমনি আমাদের যৌন চাহিদা নিবারণের জন্য সেক্স প্রয়োজন। আর সামাজিক ও ধর্মীয় দিক থেকে এটি সম্ভব শুধুমাত্র বিয়ের মাধ্যমেই।

যেনা ব্যাভিচার থেকে মুক্ত থাকাঃ- যৌবন বয়সে নিজের যৌন চাহিদা মেটাতে না পেরে অনেক ছেলে-মেয়ে যেনা, ব্যাভিচার, অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এর ফলে নিজের জীবন, পারিবারিক সম্মানহানী এমনকি পরকালীন কঠিন আযাবের ভাগিদার হতে হয়। কিন্তু অল্প বয়সে বিয়ে করলে এসকল সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

কথায় আছে, ’’একের লাঠি, দশের বোঝা’’ জীবনে অনেক ধরনের দুঃখ-কষ্ট, সমস্যার মোকাবিলা হতে হয়। কখনও কখনও এমন কিছু সমস্যার মুখাপেক্ষী হতে হয় যা একজনের পক্ষে সামাল দেওয়া প্রায় অসম্ভব। আবার কিছু কিছু সমস্যা এরকম হয়ে থাকে যে, পরিবারের কারো নিকট শেয়ার করা যায় না।

এমতাবস্থায় যদি, আপনার একজন জীবন সঙ্গী থাকে তাহলে যেকোনো দুঃখ-কষ্ট একসাথে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। যেকোনো সমস্যা সহজেই সমাধান করা যাবে। জীবনের ভাল লাগার মূহুর্তগুলোকে আরও ‍সুন্দরভাবে উপভোগ করা যাবে।

এমনকি যৌবন বয়সে পা রাখার পর পরই প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে বিষন্নতা, একাকীত্ব, ডিপ্রেশন ইত্যাদি সমস্যা প্রায় লেগে থাকে। এর ফলে সে শিক্ষা জীবন কিংবা কর্ম জীবনে উন্নতি করতে পারে না। কিন্তু এই সময় তার একজন জীবন সঙ্গী পাশে থাকলে এসকল সমস্যা সহজেই দূর করা যায় এবং যেকোনো কাজে সহজেই মনযোগ বসিয়ে সফলতা অর্জন করা যায়।

আরও পড়ুন- ফেসবুক প্রোফাইল থেকে টাকা আয় কিভাবে?

বেশি বয়সে বিয়ে করার অপকারিতাঃ-

অনেকে মনে করেন, বেশি বয়সে বা প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করবেন। যদি আপনি বেশি বয়সে বিয়ে করেন তখন আপনার অজান্তেই নিজের মধ্যে গাম্ভীর্য চলে আসবে। তখন বিয়ে করার বিষয়টি এরকম হবে যে, বিয়ে করতে হবে তাই বিয়ে করেছি। কিন্তু বিয়ের যে উপাকারিতা বা সুফল রয়েছে তা পাওয়া যাবে না।

বেশি বয়সে বিয়ে করলে স্বামী-স্ত্রী নিজেদের জন্য খুব বেশি একটা সময় পান না। বরং বেশি বয়সে বিয়ে করার কারণে দ্রুত সন্তান জন্মদান করা ও সন্তানের দায়িত্ব পালন করার সময় এসে পড়ে। যার কারণে বিয়ে করার মাধ্যমে নিজদের জীবন সাজানো বা একাকী সময় কাটানোর সুযোগ হয়ে ‍উঠে না। ফলে বুঝাবুঝির অভাবে সম্পর্কে সমস্যা বা ঝগড়া সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

তাছাড়া বেশি বয়সে বিয়ে করলে বিভিন্ন সমস্যা হয়। কিছু কিছু নারী বা পুরুষ সন্তান জন্মদানে ব্যার্থ হোন বা অনেক জটিলতায় পড়েন। কারও কারও দাম্পত্য জীবন এই কারণে ভেঙ্গেও যায়। বেশি বয়সে বিয়ে করার ফলে বর্তমান সময়ে ডিভোর্স এর সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে চলছে।

অপরদিকে অল্প বয়সে বিয়ে করলে সন্তান জন্মদানে তেমন কোনো সমস্যা পোহাতে হয় না। তাছাড়া দাম্পত্ব জীবনে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে সেটি সমাধান করারও সুযোগ পাওয়া যায়। এমনকি ডিভোর্স হলেও পুনরায় নিজের জীবনকে গুছিয়ে নেবার মতো সময় পাওয়া যায়।

অপরদিকে, সময়ের সাথে সাথে মানুষের গড় আয়ু দিন দিন কমে যাচ্ছে। আর আপনি যদি বেশি বয়সে বিয়ে করেন তাহলে আপনার সন্তানদের শু-শিক্ষায় শিক্ষিত করার সময়ও কম পাবার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অল্প বয়সে বিয়ে করে নেওয়াই উত্তম। এতে করে নিজেদের জীবনকে গুছিয়ে নিতে পারবেন এবং সন্তানদেরকেও মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।

আরও পড়ুন- অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম ২০২২

উপরোক্ত বিষয়াবলি বাস্তবতা ও স্বাস্থগত দিক থেকে আলোচনা করা হয়েছে। এমনকি চিকিৎসা বিজ্ঞান এটা বলে যে, একজন স্ত্রী তাহার স্বামীর নিকট থাকলে অসংখ্য মানসিক ও শারীরিক রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।

তবে, এখানে অল্প বয়সে বিয়ে করা মানে অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে করাকে বুঝানো হয়নি। বরং সেই বয়সকেই বুঝানো হয়েছে যখন একটি ছেলে বা মেয়ের জীবনসঙ্গীনী প্রয়োজন হয়। অনেকেই প্রয়োজন মনে হবার পরও ভয়ে নিজের পরিবারের নিকট সেটি প্রকাশ করতে পারে না।

কেননা আজকের সমাজ ব্যবস্থায় এতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটিকে কঠিন থেকে আরও কঠিন করে রাখা হয়েছে। অথচ স্বয়ং হযরত মোহাম্মদ (সা.) নিজে বলেছেন, বিয়েকে এতোটাই সহজ করে দাও যেন জিনা করা কঠিন হয়ে যায়। তাই ছেলে মেয়েদের প্রাপ্ত বয়স হবার পর পরই তাদের বিয়ে দেওয়া বুদ্ধিামানের কাজ।

আরও পড়ুন- অনলাইন থেকে টাকা আয় করার ১০টি সহজ উপায়

অল্প বয়সে বিয়ে করেছেন এরকম কিছু সফল ব্যক্তিঃ-

আমরা অনেকেই বিভিন্ন মনীষী, গুণবান ব্যক্তিদেরকে নিজেদের জীবনের আদর্শ হিসেবে অনুসরণ করি। ইতিহাসে অসংখ্য ব্যক্তি রয়েছেন যারা আমাদের নিকট বহুল পরিচিত, তারাও অল্প বয়সে বিয়ে করেছেন এবং জীবনে সফলতা ভোগ করেছেন।

  • বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.) ৭ বছর বয়সের হযরত আয়েশা (রা.) কে বিয়ে করেন এবং ৯ বছর বয়সে তাহার সাথে সংসার জীবন শুরু করেন।
  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিয়ে করেছিলেন ১৪ বছর বয়সে তখন তাঁর স্ত্রীর বয়স ছিল ৮ বছর।
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিয়ে করেছিলেন ২২ বছর বয়সে তখন তাঁর স্ত্রীর বয়স ছিল ১১ বছর।
  • দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বিয়ে করেছিলেন ১৪ বছর বয়সে তখন তাঁর স্ত্রী সারদা দেবীর বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর।
  • সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর বিয়ে করেছিলেন ১৭ বছর বসে তখন তাঁর স্ত্রীর বয়স ছিল মাত্র ৭ বছর।
  • রাজনারায়ণ বসু বিয়ে করেছিলেন ১৭ বছর বয়সে তখন তাঁর স্ত্রীর বয়স ছিল ১১ বছর।
  • নরওয়ের ৬ষ্ঠ রাজা হাকোন ১০ বছরের রাণী মার্গারেটকে বিবাহ করেছিলেন।
  • বঙ্কিমচন্দ্র বিয়ে করেছিলেন ১১ বছর বয়সে তখন তাঁর স্ত্রীর বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর।
  • শিবনাথ শাস্ত্রী বিয়ে করেছিলেন ১৩ বছর বয়সে, তখন তাঁর স্ত্রীর বয়স ছিল ১০ বছর।
  • জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর বিয়ে করেছিলেন ১৯ বছর বয়সে, তখন তাঁর স্ত্রীর বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর।
  • পর্তুগালে রাজা ডেনিস ১২ বছর বয়সী সেন্ট এলিজাবেথকে বিবাহ করেছিলেন।
  • দ্বিতীয় কিং রিচার্ড ত্রিশ বছর বয়সে ফরাসি রাজকুমারী ৭বছর বয়সী ইসাবেলাকে বিয়ে করেন।
  • লিনা মেদিনা! ৫ বছর ৭ মাস ২১ দিন বয়সে সন্তানের জন্ম দেয়ায় বিশ্বরেকর্ড করা সর্বকনিষ্ঠা মা উল্লেখ করে তার বন্ধনা করা হয়।
  • এসেক্সের কাউন্ট আগ্নেসের বিয়ের পাকা কথা হয় মাত্র ৩ বছর বয়সে এবং ১২ বছর বয়সে তার বিয়ে হয় ৫০ বছর বয়সী সঙ্গীর সাথে।
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৩ বছর বয়সে ৩ বছর বয়সি রেণুর সাথে বিয়ে করেন। বিয়ের ৯ বছর পর বঙ্গবন্ধুর ২২ বছর বয়সে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার ১২ বছর বয়সে ফুলশয্যা হয়।
  • রোমানোস ইতালির রাজকন্যা ৪ বছর বয়সী বার্থা ইউডোকিয়াকে বিবাহ করেন।

ইতিহাসের পাতায় এরকম অসংখ্য নজির আছে যারা অল্প বয়সে বিয়ে করেছেন। আমরা অনেকেই বর্তমানে নিজেদের মনগড়া কিছু যুক্তি খাটিয়ে অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতাকে অস্বীকার করতে চাচ্ছি।

আরও পড়ুন- শিক্ষামূলক উক্তি | বিখ্যাত মনীষীদের বিখ্যাত উক্তি

শেষ কথাঃ- বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা সম্পর্কে কিছু বিষয় উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি। এসকল যুক্তির পিছনে অনেকের অনেক ধরনের পাল্টা যুক্তিও থাকতে পারে সেটাই স্বাভাবিক।

তবে, সম্ভব হলে মানব জীবন সম্পর্কে একটু সময় ব্যায় করে দেখুন। আমরা আমাদের এই পার্থিব জীবনে কোনোদিন পরিপূর্ণভাবে সুখী হতে পারবো কিংবা নিজেদের সকল চাহিদা মেটাতে পারবো? পৃথিবীর শুরু থেকে আজ অবধি কেউ পারেনি এবং আমরাও পারবো না।

অপরদিকে যারা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করে বিয়ে করতে চেয়েছেন তারা কি আসলেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন? কিংবা বেশি বয়সে বিয়ে করে সুখী হতে পেরেছিলেন? পারেন নি।

পরিপ্রেক্ষিতে যারা অল্প বয়সে বিয়ে করেছেন তাদের জীবনে কি এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল? কিংবা বর্তমানে তারা কতটুকু সুখী রয়েছেন? এসকল বিষয় সম্পর্কে একটু চিন্তাভাবনা করলেই আপনি অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা সম্পর্কে বুঝতে পারবেন।

তবে, বন্ধু হিসেবে একটা অনুরোধ থাকবে, অবশ্যই নিজের পরিবারকে রাজি ও সম্মত করিয়েই বিয়ে করবেন। তাদেরকে বিয়ে করার উপকারিতা ও অপকারিতা বুঝানোর চেষ্টা করুন। কখনও পরিবারের সম্মতির বাহিরে গিয়ে কিংবা পরিবারকে ছেড়ে বিয়ে করাটা উচিত নয়। কেননা, বিয়ে করার মাধ্যমে আমাদের নিজেদের জীবনকে সুখী করার বিপরীতে পরিবার আমাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

প্রিয় পাঠক, ’’অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা’’ আর্টিকেলটির মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। সবসময় সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে ভালো থাকবেন। আমাদের আরও অন্যান্য পোষ্টগুলো ভাল লাগলে অবশ্যই পড়তে পারেন। পরবতীর্তে আমাদের ওয়েবসাইটে আসার অনুরোধ করছি। আজ এই পর্যন্তই

———– ধন্যবাদ! ———–

About Bondhu24

Check Also

১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ

১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ ; যা নিত্যদিন ব্যবহারযোগ্য

আজকের আর্টিকেলে ১০০টি ইংরেজি কমন ডায়লগ নিয়ে হাজির হয়েছি যা দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকেই ব্যবহার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *